,

বানিয়াচংয়ে ভন্ড কবিরাজের খপ্পড়ে পড়ে ধর্ষণের শিকার স্কুল ছাত্রী :: আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

জুয়েল চৌধুরী : বানিয়াচংয়ে কবিরাজি চিকিৎসার নামে স্কুল ছাত্রীর অন্তরঙ্গ মহুর্তের ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে এনাম নামের ভন্ড কবিরাজ। পরে ভূক্তভোগী ওই স্কুল ছাত্রীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ব্লেকমেইলের মাধ্যমে জিম্মি করে ৪ মাস ধরে ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই কবিরাজের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে বানিয়াচং থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার প্রেক্ষিতে বানিয়াচং থানা পুলিশ গত ৬ নভেম্বর রাতে এই ভন্ড কবিরাজকে গ্রেফতার করেন এবং ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহনে গতকাল সোমবার তাকে বানিয়াচং আমলী আদালতে প্রেরন করে পুলিশ। পরে বিকাল ৫টার দিকে বানিয়াচং আমলী আদালতের বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট ফখরুল ইসলামের আদালতে আসামী ১৬৪ ধারায় নিজের দোষ স্বীকার করার জবানবন্দি প্রদান করে।
শুনানি শেষে আদালত আসামির জামিন না মঞ্জুর কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ প্রদান করেন। অভিযুক্ত ভন্ড কবিরাজ উপজেলা সদরের ৩নং দক্ষিণ পূর্ব ইউনিয়নের জাতুকর্নপাড়া (আদারবাড়ি) এলাকার মৃত ধলাই উল্লার পুত্র মোঃ এনামুল হক (৩৫)। সে ইতোপূর্বেও একইভাবে ব্লেকমেইল করে আরও বেশ কয়েকটি বিবাহ করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সদরের ২নং উত্তর পশ্চিম ইউনিয়নের আদমখানী মহল্লার জনৈক ব্যক্তির দশম শ্রেনীর স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে ৪ মাস পূর্বে পেটের ব্যাথার কারনে ওই কবিরাজের কাছে দারস্থ হয় তার পরিবার। ভন্ড কবিরাজ তাদেরকে আশ্বস্ত করে তাদের মেয়েকে সুস্থ করার এবং মেয়েটিকে চিকিৎসা চালায় এনাম মোল্লা। চিকিৎসার এক পর্যায়ে মেয়েটির উপর কু-দৃষ্টি পড়ে কবিরাজের এবং সে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ভুক্তভোগী ছাত্রীর গোপন অন্তরঙ্গ মহুর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ব্লেকমেইলের মাধ্যমে জিম্মি করে। তারপর থেকে এই ছাত্রীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এছাড়াও মেয়েটি ভন্ড কবিরাজ এনাম মোল্লার কথার অবাধ্য হলে পূর্বের ছবি ও ভিডিও ধারণের ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেখিয়ে ২৭ জুলাই এই স্কুল ছাত্রীকে স্কুলের পাশ থেকে অপহরণ করে নিয়ে তার এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে আবারও ভিডিও ধারণ করে সে। ভন্ড কবিরাজ মেয়েটিকে আবারও ডাকলে তার ডাকে সাড়া না দিলে মেয়েটির পরিবারকে মোবাইলে ১১ আগষ্ট এসব আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছেড়ে হুমকি প্রদান করতে থাকে এনাম মোল্লা। ৮ সেপ্টেম্বর আবারও মেয়েটিকে অপহরণ করে উঠিয়ে নিয়ে ধর্ষণ করে ও ভিডিও ছবি ধারন করে ভন্ড মোল্লা কবিরাজ লম্পট এনাম। ইদানীং ওই লম্পটের নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে ঘটনাটি মেয়ের মাকে জানালে তিনি মামলা করতে বাধ্য হন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী মেয়ের মা জানান, লোকলজ্জার ভয়ে এতোদিন মুখ খুলি নাই। আমার মেয়েটি ছোট্ট বলে এই ভন্ড কবিরাজ আমার মেয়ের চিকিৎসার নাম করে যে সর্বনাশ করেছে আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই। এছাড়াও আর যেন কেউ আমার মেয়ের মতো এমন কবিরাজের দারস্থ না হয়ে তাদের সর্বনাশ না করেন এমনটাই বলেন তিনি।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অজয় চন্দ্র দেবের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে জানান, অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথেই অভিযুক্ত আসামীকে দ্রুত গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করি। আসামী বিজ্ঞ আদালতে তার অপরাধের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেওয়ায় জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করেন।


     এই বিভাগের আরো খবর